রাঙামাটিতে সশস্ত্র সংগঠনের গুলিতে ৩ গ্রামবাসীর মৃত্যু !

আলোচনায় এবার কেএনএফ

NewsDetails_01

রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর গুলিতে ৩ গ্রামবাসী নিহতের খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার বড়থলি ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা সাইজান নতুন পাড়ায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। আর এই ঘটনা নতুন সশস্ত্র সংগঠনটির প্রথম কোন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড।

বড়থলি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ইউনিয়ন সভাপতি আতুমং মারমা এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য ওয়েইবার ত্রিপুরা সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তবে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি কোনো আইনশৃংখলা বাহিনী। পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের কথা শুনলেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্থানটি দুর্গম হওয়ায় এ বিষয়ে জানাতে সময় লাগবে।

এদিকে, ‘কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ’ নামের একটি সংগঠনের ফেইসবুকে তিনজনকে হত্যার দায় স্বীকার করে নিহতদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সশস্ত্র সংগঠন জেএলএ-এর সদস্য বলে দাবি করে বলে, জেএসএস-এর ক্যাম্পে কেএনএফ’র কমান্ডো হেডহান্টার টিম এর সফল অপারেশন।

NewsDetails_03

স্থানীয় জেএসএস নেতা আতুমং মারমা সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ‘কুকিচীন পার্টি’ নামের একটি নতুন সশস্ত্র সংগঠনের কর্মীরা ইউনিয়নের সাইজান নতুন পাড়ায় এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করলে ঘটনাস্থলে ৩ জন নিহত হয়। বিষয়টি আইনশৃংখলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

আরো জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূ-খন্ড নিয়ে ‘কুকি-চিন রাজ্য’ নামে একটি পৃথক রাজ্যের দাবিতে (কেএনএফ) এবং এর শসস্ত্র শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) মনে করে, পাহাড়ের ৯ টি উপজেলা তাদের পূর্ব-পুরুষদের আদিম নিবাস, ব্রিটিশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে দখলদাররা অনুপ্রবেশ করে এবং এই ভূমি দখল করে নেয়, ফলে তারা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়।

কেএনএফ-এর অভিযোগ, বিভিন্ন মহল তাদের ভূমিতে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। জেএসএস’সহ অন্য সংগঠন গুলো কুকি-চিন জনগোষ্ঠীদের ভূমি ব্যবহার করে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করে চাঁদাবাজি, অপহরণ, গুম সহ নিরীহ মানুষদের ভীতির মধ্যে রেখেছে।

কেএনএফ-এর দাবী মতে, রাঙামাটির সাজেক উপত্যকা বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বান্দরবান উপকন্ঠ থেকে চিম্বুক পাহাড়ের ম্রো অঞ্চল হয়ে রুমা, রোয়াংছড়ি, থানছি, লামা ও আলিকদম মোট ৯টি উপজেলা নিয়ে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত একটি পৃথক রাজ্য সৃষ্টি করা।

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে সরকার পার্বত্য চুক্তি সম্পাদন করলেও পাহাড়ে শান্তি ফিরেনি। পার্বত্য জেলায় জেএসএস (মূল), ইউপিডিএফ (মূল), জেএসএস (সংস্কার) এবং ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও মগ পার্টি নামে ৫টি সংগঠনের সংঘাত ও অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে অশান্ত পাহাড়, সেই সাথে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর আত্মপ্রকাশ আর এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে পাহাড়ে সংঘাত আরো বাড়বে বলে মনে করছে স্থানীয়রা।

আরও পড়ুন