বান্দরবানের লামা পৌরসভা এলাকার চাম্পাতলী গ্রামের এক কুয়েত প্রবাসীর বসতঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার ঘটনায় ৬ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এদের মধ্যে গত শুক্রবার (২১মে) রাতে ৫ জন ও শনিবার সকালে ১ জনকে আটক করা হয়। আটকরা হলেন, নিহত মাজেদা বেগমের স্বামী নুর মোহাম্মদের ছোট ভাই আবদুল খালেক ও শাহ আলম, নিহত মাজেদা বেগমের বড় বোন রাহেলা বেগম ও তার স্বামী আবদুর রশিদ, হাফেজ সাঈদুর রহমান ও দোকানদার রবিউল ইসলাম।
এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে নিহত মাজেদা বেগমের মা লালমতি খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আজ শনিবার (২২মে) বিকেল সাড়ে ৫টার সময় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কি কারণে, কে বা কারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে এর কোন ক্লু জানা যায়নি। তবে থানা পুলিশ, পিবিআই ও বান্দরবান র্যাব-১৫ এর সদস্যরা হত্যাকান্ডের ক্লু উদ্ঘাটনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে। লাশ উদ্ধারের পর থেকে পুলিশ নুর মোহাম্মদের বসতবাড়িটির প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে পাহারায় রেখেছে। তবে টাকা-স্বর্ণালংকার লুটের জন্য এ খুনের ঘটনা সংঘটিত হতে পারে বলে পরিবারের সদস্যদের ধারনা।
এদিকে লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ ঘরের আলমিরা এবং ওয়ারড্রব ভেঙে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকর লুটে নেয়ার প্রমান পেয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রবাসী নুর মোহাম্মদের বড় স্ত্রীর মেয়ে রাবেয়া ইয়াছমিন জানান, তার মা গত বৃহস্পতিবারে ব্যাংক থেকে দুই লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছিলো।
নিহত মাজেদা বেগমের শাশুড়ী বৃদ্ধ ছকিনা খাতুন (৬৫) জানান, তাদের ঘরে আনুমানিক ১০ থেকে ১২ ভরি স্বণালংকার ছিলো। পরিবারের সদস্যদের ধারনা টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুট করার জন্যই এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।
এ বিষয়ে লামা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় এখনো কোন ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন বিষয় সামনে রেখে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছেনা। এ ঘটনায় নিহত মাজেদা আক্তারের মাতা লালমতি খাতুন বাদী হয়ে লামা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে বান্দরবান র্যাব’র কোম্পানী কমান্ডার এএসপি নিত্যানন্দ দাশ জানান, পুলিশ ও পিবিআই’র পাশাপাশি আমরাও ঘটনার ছায়া তদন্ত করবো। আমরা যাদের সন্দেহ করছি ইতোমধ্যে তাদের অনেককে পুলিশ আটক করেছে। আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যে আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লামা পৌরসভার চাম্পাতলী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী নুর মোহাম্মদের বসতঘর থেকে তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।