জনতার শুভেচ্ছায় সিক্ত বীর বাহাদুর

NewsDetails_01

বান্দরবান-কেরাণীহাট সড়কের দুপাশে দাঁড়িয়ে হাজারো মানুষ। কেউ ফুলের মালা আবার কেউ ফুলের পাপড়ির থালা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। কখন আসবেন তাদের প্রিয় নেতা । সেই নেতাকে একবার এক পলকে দেখার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন সর্বস্তরের মানুষ । বলছি বীর বাহাদুর উশৈসিং এর কথা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান ৩০০ আসন থেকে জয়ী তিনি। শুধু একবার নয় টানা সাতবার নির্বাচিত এমপি।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বান্দরবান রাজার মাঠে দেয়া হয় নাগরিক সংবর্ধনা।

এর আগে চট্টগ্রামের দোহাজারী এলাকার স্থানীয় মানুষ গলায় মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। তবে বান্দরবান কেরাণীহাট সড়ক থেকে এমপি’র গাড়ি বহর প্রবেশ করতেই স্থানীয় নেতা কর্মীরা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়।
আর বান্দরবান শহরে বীর বাহাদুর এমপি’র গাড়ি প্রবেশ করতেই সড়কের দুপাশে থাকা নেতা-কর্মীরা ফুল ছিটাতে থাকেন। আর প্রিয় নেতাকে একবার দেখতে পেয়ে যেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা সেই অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হলো।

পথের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সুবীর বলেন, অনেকক্ষণ যাবত দাঁড়িয়ে আছি। এমপিকে ফুল দিমু। ফুল দিয়েছি। অনেক ভালো লাগছে।

লামা উপজেলা থেকে আসা বেলাল হোসেন জানান, লামা থেকে এসেছি। বীর বাহাদুরকে নাগরিক সংবর্ধনা দিবে শুনে। দেখলাম বিশাল আয়োজন। শতাধিক তোরণে শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন লেখা। সেই সাথে বিভিন্নস্তরের মানুষ এমপিকে ফুলের মালা পড়িয়ে দিচ্ছেন।

এমপি বীর বাহাদুর উশৈসিং’র পিএস সাদেক হোসেন চৌধুরী জানান, রাস্তার দুপাশের হাজারো মানুষ তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পথে পথে তার গাড়ি থেমেছে। নিয়েছেন শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা।

NewsDetails_03

দিনের আলো গড়িয়ে যখন সন্ধ্যা তখন বক্তব্য দিতে মঞ্চে দাঁড়ান বীর বাহাদুর উশৈসিং। তিনি বলেন, এত ভোট দিয়ে আমার এলাকাবাসী আমাকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। ৭টি বার নির্বাচিত করে যারা আমাকে এ এলাকার সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এ ঋণ আমি শোধ করতে পারবো না।

তিনি আরো বলেন, আমার এ জীবন এ এলাকার মানুষের সেবার জন্য উৎসর্গ করে দিতে চাই। পাহাড়ি-বাঙালি এগুলোর ভেদাভেদ আমি করিনা। আমি বোঝার চেষ্টা করি সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য, কল্যাণের জন্য আমার ক্ষুদ্র মেধায় যতটুকু সম্ভব সেবা করায় আমার পণ।

বেকার ছেলে-মেয়েদের কীভাবে কর্মসংস্থান করা যায় এবার চেষ্টা থাকবে। এছাড়াও পাহাড়ের অনেক জায়গায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে । কিন্তু আবাসিক হোস্টেল নেই। যার কারণে অনেকের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এবার চেষ্টা থাকবে ওইসব এলাকায় আবাসিক হোস্টেল করার। এভাবেই দাড়াজ কণ্ঠে বলতে থাকেন বীর বাহাদুর উশৈসিং। তার প্রতিশ্রুতি শুনে পুরো অনুষ্ঠানস্থলে মুর্হুমুর্হু তালি পড়তে থাকে।

সভাপতির বক্তব্য দিতে গিয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা বলেন, বীর বাহাদুর স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ। তার উন্নয়ন আর সম্প্রীতির কথা বললেই শেষ হবে না। উনি যেখানে যাবেন ওইখানেই মানুষের ঢল । উনি একজন প্রতিষ্ঠান। উনি আমাদের সকলের মনে থাকবেন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা উনি বজায় রাখবেন।

নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো.শফিকুর রহমান, সহ-সভাপতি কাজল কান্তি দাশ, সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপদ দাশ, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাহাদুর, সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যসাপ্রু, সাংগঠনিক সম্পাদক অজিত কান্তি দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী প্রকাশ বড়–য়া, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সৌরভ দাশ শেখর, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি অমল কান্তি দাশ, সাধারণ সম্পাদক মো. সামসুল ইসলাম সহ আওয়ামীলীগ, জেলা, বিভিন্ন উপজেলা ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১, ৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ এবং সর্বশেষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পার্বত্য বান্দরবান থেকে ১ লাখ ৭২ হাজার ৭০৮ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন বীর বাহাদুর উশৈসিং। এছাড়াও ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তি চুক্তির পূর্বে এ সংক্রান্ত সংলাপ কমিটির সদস্য এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, ১৯৯৮ সালে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রথমবার এবং ২০০৮ সালে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় দ্বিতীয়বার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়াও নবম জাতীয় সংসদের সংসদ কমিটি এবং পার্বত্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। প্যানেল স্পীকার ছিলেন, যার ফলে ২০১৩ সালের ২২ জুলাই তিনি খন্ডকালীন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

আরও পড়ুন