বান্দরবানে নদীর চরে ব্রকলি’র চাষাবাদ

NewsDetails_01

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো এবার পাহাড়ী এলাকা বান্দরবানে চাষ হচ্ছে ব্রকলি। বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর চরে উৎপাদিত ব্রকলি কিনতে সবজি ক্রেতারা বেশী আগ্রহী, তাই কৃষকও পাচ্ছে তার ন্যায্য মূল্য।

নদীর চরে ব্রকলি চাষাবাদ করা কৃষক মো. আবছার জানান, প্রথমবারের মতো চারা রোপণ করার পরে দ্বিতীয় বার আবার কলি থেকে গেছে, সেখান থেকে ফের ব্রকলি পাওয়া যাচ্ছে। সাগু নদীর চরে ১ বিঘা জমিতে চাষ করে ভালো লাভ করেছি। মুল্য একটু বেশি, প্রথমে কেজি প্রতি ৭০টাকা এবং পরে ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। উচ্চ মূল্যের ফসল (সবজি) ব্রকলি।

অন্য সবজির বদলে নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে ব্রকলির বীজ রোপণ করেন কৃষক হারুন। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী ৩ মাসেই ভালো ফলন এসেছে। তবে এই সবজি পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি হলে তা অনেকে জানেন না।

সাগু নদীর চরের কৃষক মো. আবু তাহের বলেন, প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার ব্রকলি উৎপাদিত হয়েছে। বাজারে চাহিদাও বেশি এবং পার্শ্ববতী হাট বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা।

NewsDetails_03

কৃষক মো: বাদশা মিয়া জানান, ব্রকলি চাষে ফলন ভালো এসেছে। এবারে লাভবান হবেন, কারন বাজারে চাহিদা বেশি। এতে এটি উৎপাদনের পাশাপাশি মফস্বলসহ গ্রামাঞ্চলে পরিচিতি বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তবে ব্রকলি চাষে কৃষি অফিসাররা মাঠে এসে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। এটি উৎপাদনে পরিমাণ অনুযায়ী সার ও কীটনাশক ব্যবহার করলেই চলে।

বান্দরবানের ডাঃ জ্যোতি ময় মুরং বলেন, ব্রকলির পুষ্টিগুণ প্রচুর। ব্রকলি ক্যান্সার ফুড। প্রতিদিন ব্রকলি খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধক কাজ করে। ভিটামিন ‘কে’, ভিটামিন ‘সি’, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ও ফাইবারে পরিপূর্ণ, স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

আরো জানা গেছে, ব্রকলিতে রয়েছে সালফোরাফেন। যা ক্যান্সার রুখতে সাহায্য করে। লো-ক্যালরির এই সবজি হার্ট ভালো রাখতেও সাহায্য করে। এটি দেখতে ফুলকপির মতো হলেও ফুলগুলো সাদার পরিবর্তে পাতার রংয়ের মতো গাঢ় সবুজ।

ব্রকলির চাষ অক্টোবর/ নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বীজতলায় বীজ বপন করতে হয়। পরে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় মূল ক্ষেতে রোপণ করা হয়। ৭৫ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে এতে ফুল আসে। মেধা-বিকাশ, চোখের দৃষ্টি, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধিসহ মানবদেহের স্বাভাবিক পুষ্টি বজায় রাখার পাশাপাশি ব্রকলি অর্থনৈতিক লাভজনক ফসল। এটি চাষ করার জন্য স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা ডঃ সাফায়ত আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ব্রকলি এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে পরিচিত নয়। এর অনেক পুষ্টি ও ওষুধি গুণ রয়েছে। এগুলো জানতে পারলে ভোক্তাদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হবে। কৃষিতথ্য সার্ভিসের মাধ্যমে এই সব সবজির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালানো সম্ভব।

আরও পড়ুন