বান্দরবানে পর্যটনস্পট বন্ধের কারনে দৈনিক ক্ষতি ৪ কোটি টাকা

বেকার হবে অনেকে

NewsDetails_01

করোনার আতংকে বান্দরবান জেলার সব হোটেল মোটেল ও পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ফলে পর্যটকদের আগমন বন্ধ থাকায় একদিকে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ে দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে অন্তত ৪ কোটি টাকা,অন্যদিকে বেকার হয়ে পড়বে হাজার হাজার মানুষ।

সূত্রে জানা যায়,বান্দরবানের ব্যবসা বাণিজ্য সব কিছু পর্যটদের উপর নির্ভরশীল, এখন পর্যটক আসা বন্ধ। ব্যবসায়িরা জেলা শহরের শত শত পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দোকান খুলে বসে থাকলে ক্রেতার দেখা নেই। যার ফলে দোকান ভাড়া ও কর্মচারীর বেতন দিতে পারবে কিনা শংখা প্রকাশ করেছে অনেকে। আবার কোন কোন প্রতিষ্ঠান কর্মচারী ছাটাইয়ের কারনে বেকার হতে বসেছে অনেকে। একই দৃশ্য জেলা শহরের শতাধিক হোটেল,মোটেল,রেস্টুরেন্ট ও কুটির শিল্পের দোকান ও পরিবহন সেক্টরে।

বান্দরবান জীপ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহ সভাপতি মো. হারুন বলেন, পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার ফলে পর্যটকবাহী ৪ থেকে ৫ শত গাড়ী এখন বসে আছে, ফলে কি পরিমান আর্থিক ক্ষতির মুখে আমরা তা নিরুপন করা যাবেনা।

আরো জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ১৯ মার্চ থেকে জেলার সব হোটেল মোটেল ও পর্যটন স্পট বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে আবাসিক হোটেল মোটেল, রেস্টুরেন্ট মালিকরা। জেলার হোটেল-মোটেলগুলোর গ্রাহকদের ৯০ ভাগ পর্যটকরা হলেও এখন পর্যটক না থাকায় চরম লোকসানের মুখে হোটেল মোটেল মালিকরা।

বান্দরবানের হোটেল হিলভিউ এর জেনারেল ম্যানেজার সুলতান নাফিজ মাহমুদ বলেন,করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নির্দেশনার কারনে পর্যটকদের হোটেল ত্যাগ করার নির্দেশনা প্রদান করি, ফলে পর্যটন না থাকায় হোটেলে শূন্যতা বিরাজ করছে।

আরো জানা গেছে, জেলার মেঘলা, নীলাচল, নীলগীরি, শৈল প্রপাত, প্রান্তিক লেক,চিম্বুক, স্বর্ণমন্দির, শুভ্রনীলা, নীলদিগন্ত, মিরিঞ্জা, বগালেক, কেউক্রাডং, রিজুক, নাফাখুম, তিনাপ সাইতার, বড় মদক,ছোট মদকসহ অর্ধ শতাধিক পর্যটন স্পট রয়েছে। এগুলো বন্ধ থাকার ফলে প্রভাব পড়েছে ব্যবসা বাণিজ্যে ও পর্যটকবাহী যানবাহনে।

NewsDetails_03

পর্যটকবাহী যানবাহন চালক নাজির উদ্দিন বলেন, করোনার জন্য পর্যটক আসা বন্ধ করে দেয়ার ফলে বান্দরবান এখন পর্যটক শূন্য। আমরা সবাই বেকার, বুঝতে পারছি না কখন এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো।

এদিকে বান্দরবানের থানচি উপজেলার নাফাখুম,রেমাক্রি,বড় মদক,ছোট মদকসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে যেতে ২শ ইঞ্জিন চালিত বোট ব্যবহার হলেও কার্যত পর্যটক বন্ধ থাকায় বেকার সময় কাটছে বোট চালকদের। থানচির পর্যটনস্পটে ও রুমা উপজেলার, রিঝুক ঝর্ণা, বগালেক, কেউক্রাডংয়ে পর্যটকদের জন্য ১৫০জন নিবন্ধিত গাইড থাকলেও বেকার সময় কাটছে তাদের।

নিজেদের বেকারত্বের কথা বলতে গিয়ে থানচি উপজেলার ট্যুরিষ্ট গাইড জওয়াই প্রু মার্মা বলেন,বর্তমান পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে, বেঁচে থাকলে টাকা আয় করা যাবে, আমরা পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।

এদিকে বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো সিরাজুল ইসলাম বলেন, পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবকিছু বন্ধ থাকার কারনে দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে অন্তত ৪ কোটি টাকা। হোটেল কর্মরত প্রায় ১ থেকে দেড় হাজার কর্মচারী এখন বেকারত্বের মধ্যে অবস্থান করছে।

তবে করোনা সংকট কাটিয়ে উঠে জেলার পর্যটনস্পট ফের পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হলেও এই ব্যাপারে ব্যাপক প্রচার ও প্রচারনা চালানো হলেই কেবল আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছে পর্যটনের সাথে সংশ্লিষ্টরা।

বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.আমিনুল হক বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ব্যবসায়িদের সাথে বসে পর্যটন শিল্পের লোকসান কাটাতে যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হবে।

আরও পড়ুন