বান্দরবানে সাংগ্রাই উৎসব শুরু

NewsDetails_01

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় জমকালো আয়োজনে শুরু হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের নববর্ষ বরণের প্রাণের উৎসব “সাংগ্রাই”। জেলার ৭টি উপজেলায় বর্ষবরণের এই উৎসবকে কেন্দ্র করে এখন সাজসাজ রব। মৈত্রী পানি বর্ষণের মাধ্যমে পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে স্বাগত জানানো হবে নতুন বছরকে।

এদিকে প্রতিবছরের মত মারমাদের সাংগ্রাইং উৎসবকে ঘিরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান সাংগ্রাইং উৎসব উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে জেলা শহরের রাজার মাঠ থেকে বের করা হয় বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির সাংস্কৃতিক ইনিস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। এসময় ১১টি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টি সম্প্রদায়ের তরুণ তরুণীরা বৈচিত্রময় ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে ঐতিহ্যবাহী পোশাকে শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহন করে। এসময় মারমা, চাকমা, ম্রো, ত্রিপুরা, চাকসহ ১১ টি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্টি সম্প্রদায়ের সাথে অনেক বাঙালীও অংশগ্রহন করে।

বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাংগ্রাই উৎসবের শুভ সুচনা করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং এমপি। এসময় জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো.লুৎফুর রহমান, পুলিশ সুপার মো.তারিকুল ইসলামসহ সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্ধরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে গিয়ে আগামীদিনে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

NewsDetails_03

পরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টির সাংস্কৃতিক ইনিস্টিটিউটে আয়োজন করা হয় এক বয়োজ্যেষ্ঠ পূজা। আর এসময় বিভিন্ন পাড়া ও গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় অনুষ্টানে বয়োজ্যেষ্ঠদের বরণ করে নেয় তরুন তরুনীরা,আর এরপরই তাদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে প্রদান করা হয় নানা রকম দানীয় বস্তু।

বান্দরবান সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শৈটিং ওয়াই বলেন, আগামী ১৪এপ্রিল দুপুরে সাংগু নদীর পাড়ে বুদ্ধ মূর্তি স্নান, রাতে পাড়ায় পাড়ায় পিঠা উৎসব, ১৫ এপ্রিল রাজার মাঠে মৈত্রী পানি বর্ষন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে মারমা সম্প্রদায়ের এই এতিহ্যবাহী এবারের সাংগ্রাই উৎসবের।

মৈত্রি পানি বর্ষন উৎসবের সময় তরুন-তরুণীরা নির্ধারিত মঞ্চে অবস্থান করে। তরুণীদের সামনে বিভিন্ন পাত্রে বা জলাধারে জল রাখা থাকে। এক একজন তরুণ একজন তরুণীর দেহে জল ছিটায়। আর ঐ তরুণীও ঐ তরুণের দেহে পাল্টা জল ছিটিয়ে তার প্রতি উত্তর দেয়।

পাহাড়ের চাকমা স¯প্রদায়রা এই উৎসবকে বিঝু, মারমা’রা সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরারা বৈসু বা বৈসুক বলে। ত্রিপুরাদের বৈসুর (বৈ), মারমাদের সাংগ্রায়ের (সা) চাকমাদের বিঝুর (বি) থেকে “বৈসাবি”। মারমা সম্প্রদায়ের কাছে বর্ষবরণের এই উৎসব “সাংগ্রাই” নামে পরিচিত।

আরও পড়ুন