এ যেন এক যুদ্ধ বিদ্ধস্ত থানচি !

NewsDetails_01

বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার প্রধান বাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা দেখে আতকে উঠছে অনেকে। আগুনের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির রুপ দেখে অনেকে মনে করছেন এটা কোন যুদ্ধ বিদ্ধস্ত এলাকা। না, থানচি উপজেলায় যুদ্ধের মতো কোন ঘটনা না ঘটলেও আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে এমন মনে হতে পারে যে কারো।

আজ সোমবার ভোরে এক অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে থানচি বাজারের ব্যবসায়ীরা। আগুনের ঘটনায় পুরো বাজার জ্বলে শেষ হওয়ার কারনে যেন পথে বসেছে তারা, সহায়-সম্বল হারিয়ে মাথা গুজার ঠাঁই নেই তাদের।

সরকারি তথ্য মতে থানচি বাজারে ২০৫টি দোকান পুড়ে গেলেও বেসরকারী হিসাবে অন্তত তিন শতাধিক দোকান ও ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে জানা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) ভোর পাচঁটার পর এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। তবে কিভাবে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে তা প্রাথমিক ভাবে জানা সম্ভব হয়নি ।

ধারনা করা হচ্ছে, থানচি বাজারের কোন দোকানের চুলা থেকে আগ্নিকান্ডের সূচনা হতে পারে। একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে একে একে থানচি বাজারে অবস্থিত দোকান ও বসতবাড়ি সবগুলো পুড়ে যায় । এসময় অধিকাংশ মানুষ ঘুমের মধ্যে থাকায় তারা কোন ভাবে দোকান ও ঘর থেকে প্রাণ নিয়ে বের হন। তারা ঘর ও দোকান থেকে কোন কিছুই বের করতে পারেনি বলে জানা গেছে। এতে অন্তত ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে থানচি বাজার ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি স্বপন বিশ্বাস পাহাড়বার্তাকে বলেন, আগুনের ঘটনায় ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

NewsDetails_03

এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বান্দরবান শহর থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট পৌনে ৬ টার দিকে থানচির উদ্দ্যেশে রওনা হয়। আড়াই ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

থানচি উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মী মং সি ইউ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, এই ক্ষতি কখনো পূরণ হবার নয়, অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো, আপনারা আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন।

ঘটনার পর থানচি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লামং মারমা, থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক মৃদুল, লেফট্যানেন্ট কর্নেল সানবীর হাসান মজুমদার ও ১৬ ই সি বি মেজর মোহাম্মদুল কিবরিয়া সাঈদসহ অনেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এদিকে পাহাড়বার্তার থানচি প্রতিনিধি অনুপম মার্মা বলেন, থানচির ভয়াবহতার এমন রুপ আগে কখনো দেখা যায়নি। যেন যুদ্ধ বিদ্ধস্ত কোন এলাকা। একদিকে করোনা সংকট, অন্যদিকে আগুনে পুড়ে সব শেষ থানচির ব্যবসায়িদের।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ৪ বার থানচি বাজার পুড়ে যায়। ১৯৮৪ সালে প্রথমবার, ১৯৯৮ সালের ১২ জুন, ২০০৬ সালের ৬ অক্টোবর এবং আজ সোমবার ২৭ এপ্রিল চতুর্থ বারের মতো থানচি বাজার পুড়ে যায়। প্রথম বার ৫০ দোকান, ২য় বার ১২০ দোকান, তৃতীয় বার ২ শ দোকান এবং এবার তিনশ দোকান পুড়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা আগুন লাগার ঘটনা নিশ্চিত করে পাহাড়বার্তাকে বলেন, ঘটনার সাথে সাথে আগুন নিয়ন্ত্রনের জন্য বান্দরবান শহর থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পাঠানো হয়, সেখানে দ্রুত ত্রাণও পৌছানো হবে।

আরও পড়ুন