বান্দরবানে এবার যেমন হবে গরীবের ঈদ

NewsDetails_01

মাহে রমজানের ২ মাস ১০ দিনের পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রতিবছরের মতো এবারও উদযাপন হচ্ছে এইদিনটি। কাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন হবে বলে জানান মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন।

প্রতি বছর কোরবানীর ঈদ আনন্দের সাথে উদযাপন হলেও এবার সেই আনন্দের কিছুটা রাশ টেনেছে করোনা ভাইরাস। করোনার কারনে টানা লকডাউনের কারনে জনজীবন যেমন থমকে দাড়িয়েছে, ঠিক তেমনি মানুষের আয় রোজগার কমে গেছে বলে জানা যায়। আর এনিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করেছেন ইয়াছিনুল হাকিম চৌধুরী ও সুহৃদয় তঞ্চঙ্গ্যা।

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা সদর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুমি আক্তার (২৮) জানান, গরীবদের ঈদ উদযাপন আর কেমন হবে! আমি একজন বিধবা, আমার সন্তানও প্রতিবন্ধী কিন্তু কোনো সাহায্য কিংবা সহযোগীতা পাই না। দিনমজুরি করে সংসার চলে, আমাদের আবার ঈদ আনন্দ !

আলীকদমের ২ নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের পূর্ব রেপারপাড়ার বাসিন্দা সখিনা বেগম (২৮) জানান, আমাদের সহযোগিতা করার মতো কেউ নেই। ঈদুল আজহা কিংবা ঈদুল ফিতরের দিনেও বাচ্চাদের জন্য কিছুই নিতে পারি না। আশেপাশে লোকজন কোরবানী করে, এরা দাওয়াত দিলে একটু ভালোমন্দ খেতে পারি।

NewsDetails_03

আলীকদমের ৩ নং নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফাতেমা বেগম (৫৫) জানান, জীবনে কখনো ঈদুল আজহা করতে পারিনি। আমার হাবাগোবা প্রতিবন্ধী ছেলেটাকে নিয়ে আমার সংসার। স্বামী মারা গেছে ১৮ বছর আগে। সংসার চলে ইউনিয়ন পরিষদের চাল, আর পাশের বাড়ির মানুষদের সহযোগিতায়। মাঝেমধ্যে কাজ পেলে করি। ঈদ, কোরবান দিনে আশেপাশে লোকজন ডেকে নিয়ে যায়। আমরা গরীব মানুষ, বাড়ির আশেপাশে লোকজনদের সহযোগিতায় দিন চলে যাচ্ছে। আমার ঈদ কোরবানি সারা বছর এই রকমি চলে যায়।

কোরবানীর ঈদ আনন্দের ব্যাপারে বান্দরবান শহরের যৌথ খামার এলাকার দিনমজুর মুনির আহম্মদ বলেন, আমাদের আবার ঈদ আনন্দ, করোনার কারনে চট্টগ্রামে চাকরী হারিয়ে বান্দরবানে দিনমজুরি করছি, এবার টাকা না থাকায় ঈদ করা হবেনা আনন্দের সাথে।

বান্দরবান শহরের টমটম চালক মো. হেলাল হোসেন বলেন, আমি টমটম চালিয়ে জীবন যাপন করে থাকি। প্রতিবছর অন্তত একটি ছোট ছাগল নিয়ে কোরবানি করার চেষ্টা করি। কিন্তু এবার করোনা আর লকডাউনে সব বন্ধ থাকার কারণে আয়-রোজগার তো ছিল-ই-না। বরং অনেক টাকা ঋণের বোঝা আমার উপরে পড়ে আছে। জানি না কখন এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো।

বান্দরবান শহরের রিক্সা চালক মো.করিম উদ্দিন বলেন, আমার দিনে এনে দিন খায়। কিন্তু লকডাউনের কারণে এখন তেমন রিক্সায় মানুষ চড়ে না। আগের মত তেমন ভাড়াও পাওয়া যায়না। প্রতিবছর আমাদের বাসার আশ পাশে অনেকে কোরবানি দিতো। তাদের কাছ থেকে কিছুটা মাংস পাওয়া যেত কিন্তু এবার অনেকে কোরবানি দিচ্ছেনা। তাই হয়তো কোরবানীর মাংস খাওয়া টাও খাওয়া হবে না।

আরও পড়ুন