মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ মানুষ : নির্বিকার বান্দরবান পৌরসভা

বান্দরবান পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় মশার উপদ্রবে টেকা কঠিন হয়ে পড়েছে, ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করেও রেহাই মিলছে না, ফলে ম্যালেরিয়া রোগী বাড়তে পারে। মশার জ্বালায় শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রত্যেক মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে যেন নির্বিকার বান্দরবান পৌরসভা। বান্দরবান পৌর এলাকায় জমে থাকা ড্রেনের পানি, ময়লা-আবর্জনা দীর্ঘদিনেও পরিষ্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

পৌর কর্তৃপক্ষ ও পৌরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে বান্দরবান পৌরসভা গঠিত। লোকসংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর পৌর এলাকাটি অনেক ভাগে বিভক্ত এলাকা। পৌর এলাকায় ঘনবসতি, এলাকার চারপাশের ড্রেন পরিষ্কার না থাকা, যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ফলে পানিতে ময়লার স্তূপ জমে প্রচুর মশা জন্ম নিচ্ছে। শীতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবেও মশা নিধন হচ্ছে না।অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভাও মশা নিধনের কোন পদক্ষেপ না থাকায় বেড়ে গেছে মশার উপদ্রব।

পৌরসভার আর্মি পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, সন্ধ্যা নামার পর থেকেই ঘরে মশার উপদ্রব বেড়ে যাচ্ছে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখলেও মশা কমছে না।

পৌরবাসীর দাবি, আগে পৌরসভার উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় মশক নিধক ওষুধ স্প্রে করা হতো। কিন্তু চার থেকে পাঁচ বছর হলো পৌরসভা এ ধরনের কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। পৌর এলাকার ড্রেন গুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে না, ফলে মশা বাড়ছেই, আর এই কারনেই ম্যালেরিয়া রোগীও বাড়বে।

সরেজমিনে গত সোমবার সকালে পৌরসভার আর্মি পাড়া, ওয়াপ্দা ব্রিজ, কাশেম পাড়া, ইসলাম পুর, হাফেজ ঘোনা, বনরুপা, মেম্বার পাড়া বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, পৌর এলাকায় অধিকাংশ এলাকায় ছড়িয়ে আছে ছোট ছোট ডোবা-নালা। এসব ড্রেনের ওপর দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে মশা।

বান্দরবান সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী ইয়াকুব উদ্দিন বলেন, তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে বান্দরবানে আছেন কিন্তু এবার মশার উপদ্রব যেন খুব বেশি। মশার কামড়ে সন্ধ্যা থেকেই অতিষ্ঠ হতে হয়। কয়েল, ধোঁয়া কিছু দিয়েই কাজ হচ্ছে না।

কাশেম পাড়ার তাওহীদা নাসরিন বলেন, শুধু রাতে না, দিনেও ঘর একটু অন্ধকার হলেই মশা কামড়াচ্ছে। ফলে অনেক সময় দিনেও মশারি ব্যবহার করতে হচ্ছে।

বান্দরবানের বাসিন্দা চৈতী বলেন, বিগত অন‍্যান‍্য যেকোন বছরের তুলনায় এ বছর মশার পরিমাণ বেশি। যে হারে শহরের চারপাশে ময়লা আবর্জনা আর গরুর পাল দেখা যায়, মনে হয়না এটা পর্যটন এলাকা।

প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কাজল কান্তি দাশ এর আগে ব্যাক্তি উদ্দ্যেগে পৌর এলাকায় মশক নিধনে উদ্দ্যেগ গ্রহন করে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করলেও এবার এই ধরণের উদ্দ্যোগ দেখা যায়নি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান পৌরসভার সচিব তৌহিদুল ইসলাম পাহাড়বার্তা’কে বলেন, মশক নিধনে পৌরসভার কার্যক্রম চলমান আছে এখন বাজার এলাকায়, পরে পাড়া ভিত্তিক এই কার্যক্রম চালানো হবে। তিনি আরো বলেন, দ্রুত নালা, নর্দমাও পরিষ্কার করা হবে,যাতে মশা কমে আসে।

আরও পড়ুন