বান্দরবানের রুমা উপজেলার খাদ্য গুদাম থেকে ১৮৫মে:টন ভিজিডি’র চাল উধাও হয়ে গেছে। আর উধাও হওয়া এ খাদ্য নিয়ে রুমা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা দোষ চাপাচ্ছেন রুমার ৪ ইউপি চেয়ারম্যানদের উপর। আবার চেয়ারম্যানরা দোষ চাপাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তার উপর, তাই প্রশ্ন উঠেছে আসলে এই চাল কার পকেটে ?
সরেজমিনে খবর নিতে গেলে চেয়ারম্যানরা জানান, গত বছরের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত কোন ধরনের ভিজিডি’র চাল পাননি ১নং পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা, ২নং সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈমং মারমা, ৩নং রেমাক্রী প্রাংসা ইউপি চেয়ারম্যান জিরত্লোয়াং বম ও ৪নং গালেংগ্যা ইউপি চেয়ারম্যান শৈউসাউ মারমা। চেয়ারম্যানরা বলেন, কোন ধরনের চাল না পেলেও খাদ্য অধিদপ্তরের বিলি আদেশ (ডি,ও) পেপারে তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তাদের নামে প্রতিমাসে চাল উত্তোলন দেখিয়েছে, কিন্তু তারা ৭মাস কোন ধরনের চাল উত্তোলন করেননি বলে জানান।
এই বিষয়ে রুমা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা উচনু মারমা বলেন, যথাযথ অফিসিয়াল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য অধিদপ্তরের বিলি আদেশ (ডি,ও) পেপারে নিজের স্বাক্ষর দিয়ে চেয়ারম্যানরা তাদের চাল উত্তোলন করেছেন সাত মাস ধরে। তবে এখন ৪জন চেয়ারম্যানরা চাল উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করছেন। তাদের স্বাক্ষর গুলো এক্সপার্ট দ্বারা পরীক্ষা করে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানায়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ২নং সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈমং মারমা জানান, বিগত ৭মাস ধরে তারা কোন চাল পাননি খাদ্য অধিদপ্তর থেকে, যার কারনে উপকারভোগীদের কাছেও এ চাল বিতরন করতে পারেননি। তারা প্রতিমাসে তাগাদা দিলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নানান অজুহাতে তাদের চাল দেননি।
তিনি বলেন, আমরা গোপন সংবাদে জেনেছি সবগুলো চাল ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা ৩২টাকা কেজিতে বিক্রি করে দিয়েছেন কালো বাজারে। কাগজে চেয়ারম্যানদের যেসব স্বাক্ষর দেয়া হয়েছে সেগুলো ভুয়া স্বাক্ষর, যা আমার সাথে মিলে না। তিনি ভারপ্রাপ্ত এ কর্মকর্তার উপযুক্ত শাস্তি কামনা করেন।
এদিকে বিগত ৭মাস ধরে বিজিডির চাল না পাওয়ায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের উপকারভোগী অসহায় ও দু:স্থ পরিবারের মাঝে দেখা দিয়েছে নানা ক্ষোভ। তারা চাল না পাওয়ার পরও এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রশাসনের উপরও আস্থা হারাচ্ছে এলাকার লোকজন।
এবিষয়ে রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইয়ামিন হোসেন বলেন, খাদ্য গুদামের যে অনিয়ম হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হবে। যে দোষী সাব্যস্ত হবে তাকে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এদিকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে বান্দরবান জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আতিয়া চৌধুরীকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে জড়িত ব্যক্তির বিষয়ে ব্যবস্থার নেয়ার আশ্বাস দিয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহমুদুল হাছান বলেন, এ বিষয়ে যদি আমার অফিসের কোন কর্মকর্তা জড়িত থাকে তবে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যেই জড়িত থাকুক তাকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবেনা।