কাপ্তাইয়ের ফুকির মুরং ঝর্না, বর্ষায় প্রাণ পেয়েছে নবরুপে

NewsDetails_01

রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ৫ নং ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড এর পাগলী উপর পাড়ায় ফুকির মুরং ঝর্নার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমন পিপাসুদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। এর আশেপাশে ছোট বড় কয়েকটি ঝর্না, ঝর্না হতে অবিরাম ধারায় পানির প্রবাহমান ধারা, পাখির কিচির মিচির শব্দ এবং পাহাড়, বন বেষ্টিত এই ফকির মুরং ঝর্না যেন প্রকৃতি দেবীর এক অপূর্ব সৃষ্টি, তাই প্রতিদিন ভীড় লেগে আছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। বিশেষ করে বর্ষায় নবরুপে প্রাণ ফিরেছে এই ঝর্ণার।

এলাকার বাসিন্দা সংগীত শিল্পী, সুরকার ও গীতিকার শিক্ষক সূর্য্যসেন তনচংগ্যা জানান, আমরা দাদুদের মুখ থেকে শুনেছি, শত বছর আগে এই পাহাড়ে এক সাধক বা ফকির ধ্যান করতো, লোকজন পুজা দিতো, মানত করতো, ফকির ধ্যান করতো বলে স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছে ফুকির মুরং বা ফকির কুয়া বা ফইরা মুরং ঝর্না।

ঘাঘড়া-বড়ইছড়ি সড়কের বটতলি এলাকার পূর্ব পাশ ধরে ৩ কিমি পাহাড়ী পথ আর ছড়া পাড় হয়ে এই স্থানে পৌঁছানো যায়। আশেপাশে শত শত তনচংগ্যা পরিবারের বসবাস। পথেমধ্যে পাগলি মুখ পাড়া, পাগলি মধ্যম পাড়া গ্রাম পার হয়ে পাগলি উপর পাড়া এই ঝর্নার দেখা মিলবে। এই স্থানে যেতে যেতে আরোও পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন পাহাড় হতে বয়ে চলা ছড়ার পানির বহমান ধারা, আশেপাশে অনেকগুলো পাহাড়ী গাছ গাছালি এবং ছোট ছোট ঘর।

গত বুধবার (১৯ জুলাই) ঝর্না দেখতে আসা কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমন দে জানান, এই ঝর্ণায় আসার পথে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছোট ছোট ঘর, ঝিরি হতে বয়ে যাওয়া হীমশীতল পানি সত্যিই উপভোগ্য।

NewsDetails_03

তিনি আরোও জানান, প্রধানমন্ত্রী কমিউনিটি ব্যাজ ট্যুরিজম এর মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের আত্মসামাজিক উন্নয়ন এর যেই পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন, তারই আলোকে এই ফকির মুরং ঝর্ণার সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে উপজেলা প্রশাসন হতে অবকাঠামোগত নির্মাণ করে এই ঝর্নাকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় করে তোলা হবে।

এই ঝর্না দেখতে যাওয়া কাপ্তাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমকর্তা রুহুল আমিন জানান, এই ঝর্নায় আসার পর ঝর্নাটার দিকে থাকালে সত্যি প্রানটি ভরে যায়।

ঝর্ণা দেখতে আসা পর্যটক খন্দকার মাহমুদুল হক মুরাদ ও ঝিমি চাকমা জানান, অপুর্ব এই ফকিরা মুরং ঝর্ণা যেন প্রকৃতি দেবীর অপুর্ব নির্দশন। বিশেষ করে ঝর্ণায় আসার সময় ঝিরিঝিরি শব্দে পানির প্রবাহনধারা আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে।

১০০ নং ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুণ তালুকদার জানান, স্থানীয় ভাষায় এটা ফইরা মুরং ঝর্ণা নামে পরিচিত। যদি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে এখানে উন্নয়ন করা হয় তাহলে পর্যটকের আগমন আরোও বাড়বে।

এলাকার ৫ নং ওয়ার্ড এর ইউপি সদস্য তপন তনচংগ্যা জানান, এই ঝর্না দেখতে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে। তবে আমরা মাঝে মাঝে দেখতে পাই অনেক পর্যটক নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহন করে এবং আশেপাশে মানুষের ফলমূল নষ্ট করে। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ হতে এসব কাজ হতে বিরত থাকতে পর্যটকদের অনুরোধ জানাই এবং পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ জানাই যেন এই ঝর্নায় আসার পথটুকু আরোও মেরামত করে দেয় এবং এখানে ওয়াশব্লক নির্মাণ করা হয়।

আরও পড়ুন