বান্দরবানের এলএসডি গুলোতে আস্থাভাজনদের দিয়ে চলছে হ্যান্ডলিং কাজ
খাদ্য বিভাগ সমাচার
বান্দরবানে টেন্ডার ছাড়া হ্যান্ডলিং এর কাজ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে খাদ্য বিভাগের বিরুদ্ধে। জেলা দপ্তরকে ম্যানেজ করে গত ৩ মাস ধরে মেয়াদ বাড়িয়ে হ্যান্ডলিং কাজ করছে খাদ্য বিভাগ।
সূত্রে জানা যায়, মূলত খাদ্য গুদামে খাদ্য শস্য লোড-আনলোড কার্যক্রমের জন্য ২ বছর মেয়াদে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে থাকে খাদ্য বিভাগ। কিন্তু তাদের সেই দুই বছরের মেয়াদ শেষ হয়না যেন! জেলা কর্মকর্তার আস্থাভাজন ঠিকাদারদের ঘুরে ফিরে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য একের পর এক মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ঠিকাদারদের।
আরো জানা গেছে, বর্তমানে একই কায়দায় ঠিকাদারদের মেয়াদ বৃদ্ধি করে কাজে বহাল থাকার জন্য নিজেদের ভিন্ন ভিন্ন নামে দর থেকে (সর্বনিম্ম) দাখিল করে অফিসের সহযোগিতায় পায়তারা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় মেয়াদ বৃদ্ধি না করে যারা সর্বননিম্ম দর দাখিল করেছেন তাদেরকে চুক্তির জন্য আহ্বান করার দাবী জানান অভিযোগকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো। চুক্তি না করলে তাদেরকে আগামীতে খাদ্য বিভাগে কালো তালিকাভুক্ত করারও অনুরোধ জানানো হয়।
এদিকে, আপত্তি ও অভিযোগের পরও বান্দরবানের ৭টি এলএসডির (স্থানীয় খাদ্য গুদামের) শ্রম ও হস্তার্পণ ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর। এতে করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে পেশাদার ঠিকাদারদের মধ্যে। তাদের অভিযোগ জেলা কর্মকর্তার সঙ্গে গোপন সমঝোতার কারণে এভাবে গড়িমশি করা হচ্ছে। যদিওবা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (পিপিআর) বিধি অনুযায়ী, প্রতি দুই বছর পর পর দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের নির্দেশনা রয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ (অবশিষ্ট সময়) ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের খাদ্যশস্য, খাদ্যদ্রব্য, খালিবস্তা ত্রাণ ও অন্যান্য দ্রব্য/পণ্য সামগ্রীর শ্রম নিয়ন্ত্রণ কাজের জন্য গত ২৬ জুলাই উম্মুক্ত দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এই টেন্ডারে ৪৭৫ দরপত্র সিডিউল বিক্রি হলেও জমা পড়ে ১৩৭টি। ২২অক্টোবর দরপত্র খোলা হয়। একটি সূত্র জানিয়েছে, যাচাই বাছাই শেষে পুনরায় টেন্ডার প্রক্রিয়ার দিকে এগুচ্ছে জেলা অফিস।
এই বিষয়ে জানতে একাধিকবার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড) কানিজ জাহান বিন্দুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এই বিষয়ে ঢাকা ট্রিবিউন এর বান্দরবান প্রতিনিধি এস বাসু দাশ প্রতিবেদককে বলেন, জেলা খাদ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলেন। পৌর এলাকায় ওএমএস চাউল বিতরণে অনিয়ম, সরকারের পৌরসভা-ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত দেশি/ বিদেশী হিসাবে চাল দেওয়া হলেও, পৌরসভা ও ইউনিয়নের দামী চাল বদলিয়ে কমদামী নিম্নমানের চাল দেওয়া হয় বলে আমরা অভিযাগ পাই।
তিনি আরো বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে চলে আসা খাদ্য বিভাগে অনিয়ম, দুর্নীতির দায় এড়াতে এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সাথে এমন আচরণ করেন।
এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক হীরা লাল তংচঙ্গ্যা বলেন, এলএসডি হ্যান্ডলিং টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান আছে। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় পার হওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, তিনি কোন উত্তর না দিয়ে মোবাইলের সংযোগ কেটে দেন। অভিযোগে জানা যায়, পাবলিক প্রউিরমেন্ট (পিপিআর) ২০০৬ ও ২০০৮ এ উম্মুক্ত দরপত্রের ক্ষেত্রে সর্ব নিন্ম দরদাতাকে বিধিমালা অনুযায়ি প্রতিযোগিতা মূলক দরপত্রের মাধ্যমে সর্বনিন্ম দরদাতাকে কাজ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আদুই রঞ্জন তংচঙ্গ্যা জানান, হয়তো ঠিকাদারদের মধ্যে কোন্দলের কারণে নানা অভিযোগ করা হচ্ছে, অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। শ্রমিকের নায্য মূল্যটুকু দেখা হবে। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় আগের ঠিকাদারদের দিয়েই কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।