মা-ছেলেকে পেটালেন আলীকদম মাতামুহুরি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা !

NewsDetails_01

বান্দরবানের আলীকদমের মাতামুহুরী রিজার্ভের তুলাতুলী এলাকায় ছোট ও শুকনো লাকড়ী সংগ্রহকারী এক বয়স্ক নারী ও তারই ৯ বছরের শিশুকে নির্মমভাবে পিঠিয়েছেন আলীকদম মাতামুহুরি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বীট কর্মকর্তা আব্দুল জলিল। আহতরা হলেন,ফাতেমা বেগম (৪৫), নুরুল আমিন (৯)। ফাতেমা বেগম স্বামী সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে থোয়াইচাহ্লা পাড়ায় বসবাস করছেন।

গত ২৯ আগষ্ট সকাল সাড়ে দশটার মাতামুহুরী সংরক্ষিত তুলাতুলি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

আহত ফাতেমা বেগম বলেন,তুলাতুলি এলাকায় কেটে ফেলা শুকনো গাছের ডালপালা সংগ্রহ করছিলাম। এমন সময় বীট অফিসার আব্দুল জলিলসহ অনেকেই উক্ত এলাকায় আসে, আমাদের পাশে আরও দুইজন ব্যক্তি ডালপালা কাটছিল, তারা উক্ত অফিসারকে দেখে পালিয়ে যায়। পরে বীট অফিসার আব্দুল জলিল পলায়নকারী ব্যক্তিদের নাম চাইলে আমার ছেলে তাদের নাম জানে না বললে, আমার ছোট ছেলেটাকে প্রচুর মারে একপর্যায়ে উপরের দিকে তুলে মাটিতে আছাড় মারে। আমার ছেলেকে মারার প্রতিবাদ করায় আমাকেও চুলের মুটি ধরে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়।

‌কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছে, নারী ও নারীর ছেলে লাকড়ি সংগ্রহ করছিল, ফরিদ নামের এক বন কর্মী প্রথমে ছেলেটিকে গলা ধাক্কা দেয়। পরে লাঠি দিয়ে পিঠিয়েছে। মা ছেলেকে বাঁচাতে গেলে ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ অফিসার আব্দুল জলিল মহিলাকেও একটি লাঠি দিয়ে মারধর করেন। পরে বনকর্মী ফরিদ লাঠি দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করেন।একপর্যায় টেনেহিঁচড়ে তাদের নিয়ে যেতে চাইলেই আমরা বাধা দিলে,তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

NewsDetails_03

‌এবিষয়ে আব্দুল জলিল বলেন,উক্ত মহিলার কাছ থেকে একটি বড় দা (গাছ কাটার দা) ও করাত উদ্ধার করা হয়েছে। মহিলারা পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান। তিনি মহিলা ও তার ছেলেকে পিঠানোর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

‌তিনি আরও বলেন, রিজার্ভ সংরক্ষিত এলাকা,মা ও ছোট ছেলেটির তো এখানে যাওয়ার কথার কথা না। তাহলে ঘটনাস্থলে যারা ছিল তারা কি মিথ্যে বলছে আর এতো লোক থাকতে আপনার নাম বলতে যাবার কারণ কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান,সেটি আমি বলতে পারব না। ‌পরে কথার একপর্যায় তিনি স্বীকার করে বলে আমার পদক্ষেপটি সঠিক ছিল না,ভূল বুঝতে পেরে উক্ত মহিলাকে ঔষুধ কেনার কিছু টাকাও দিয়েছি।

রাত আটটার সময় এবিষয়ে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রাতে তিনি কোন কথা বলবেন না বলে ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে ৩০ আগষ্ট মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

আলীকদম স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোঃ,মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী জানান,আমেনা বেগম ও উনার ছেলে হাসপাতালে ভর্তি আছে। শরীরে ব্যথা রয়েছে জানিয়েছে আমেন বেগম। তাই আজকে (৩০ আগষ্ট) এক্সরের জন্য উনাদের রেফার করা হয়েছে। তবে শারীরিক আঘাত এতো গুরুতর নয়। জরুরি বিভাগে যারা উনাদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছে তারাই ভাল বলতে পারবে।

আরও পড়ুন