সরকারের ৭শ কোটি টাকার উন্নয়নে বদলে গেছে আলীকদম

NewsDetails_01

একসময়কার দূর্গম অনুন্নত উপজেলা হিসেবে খ্যাতি ছিল বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলা। প্রাকৃতিক সম্পদের বিপুল সম্ভাবনাময় একটি উপজেলা হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ার আলীকদম উপজেলাকে একটি পিছিয়ে পড়া উপজেলা হিসেবে গণ্য করা হতো। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়নের ফলে সেই আলীকদম এখন পর্যটন সম্ভাবনাময় একটি উপজেলায় পরিণত হয়েছে।

আলীকদম থানচি-আলীকদম সদর থেকে কুরুকপাতা মায়ানমার সীমান্ত সড়ক যোগাযোগ, পর্যটন ও জীবনমানে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পাঁচ বছর আগেও কুরুকপাতা, পোয়ামুহুরী, দৌছড়ি যাতায়াতের মাধ্যম ছিল পায়ে হাঁটা ও নৌপথে, এখন সেখানে যানবাহন নিয়ে খুব সহজে যাওয়া যায়। পাহাড়ের অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে পাহাড়ের বসবাসরত স্থানীদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য ও চিকিৎসা সেবাসহ নানা সুবিধা ভোগ করছে আলীকদমের প্রান্তিক জনপদে অধিবাসীরা। এরমধ্যেই আলীকদম উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় পৌছে গেছে বিদ্যুৎ, যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছায়নি সে পাহাড়ও সৌরবিদ্যুতের আলোতে আলোকিত।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন, মানুষের জীবনযাত্রা মান উন্নয়নের অত্র উপজেলায় আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। যা অন্য কোন সরকারের আমলে এত উন্নয়নের নজির দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন বীর বাহাদুরের মাধ্যমে দূর্গম আর দূর্গম নেই, গ্রাম আর গ্রাম নেই, শহরে পরিণত হয়েছে। পাহাড়ের শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ২০ স্কুল সরকারিকরণ করা হয়েছে। সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই।

NewsDetails_03

শেখ হাসিনার হাত ধরে রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্রীজ, কালভার্ট, সাইক্লোন সেন্টার, অবকাঠামো, প্রশাসনিক ভবন, অফিস, ধর্মীয় প্রতিষ্টান, শতভাগ বিদ্যুৎয়ান, গভীর নলকূপ, স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেট, ভবণ ও গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসই করণসহ সব ধরনের উন্নয়ন সম্পন্ন হয়েছে এই সরকারের আমলে।

দায়িত্বশীল সুত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকারের আমলে যে পরিমান উন্নয়ন আলীকদমে হয়েছে, বিগত কোন সরকারের আমলে এতো উন্নয়ন হয়নি। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে আলীকদম উপজেলার মানুষের দুর্ভোগ অনেকটা লাঘব হয়েছে। এই উন্নয়ন প্রকল্প গুলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সরকার দল তথা আওয়ামী লীগের পক্ষে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে এবং স্থানীয় জনগণকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট প্রদানে প্রভাবিত করবে বলে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম জানান, আমি জুলাই মাস থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছি। এখন পর্যন্ত ৫০ টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে, আরও কিছু কাজ চলমান আছে।

নির্মাণাধীন আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন। ছবি-পাহাড়বার্তা

আরো জানা গেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী সরকারের আমলে গত পাঁচ বছরে উল্লেখ্যযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতিকরণ ও ভবন নির্মাণ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় ১৫ কোটি ২৬ লক্ষ টাকায় মাধ্যমিক সরকারি-বেসরকারী বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ করেছে। এরমধ্যে রয়েছে ৫ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকায় ৬ তলা বিশিষ্ট আলীকদম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পানি শোধনাগারের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত ও সদরে পানি সাপ্লাই লাইন স্থাপন ২ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা ও নয়াপাড়া ডীপ টিউবওয়েলের ২ কোটি ১ লক্ষ টাকার ব্যয়ে পানি সাপ্লাই লাইন স্থাপন। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড গত ১৫ বছরে ৬০ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকায় ছাত্রাবাস, মসজিদ, সড়ক, ড্রেইনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। উপজেলায় প্রায় ১১৭ কোটি টাকায় স্কুল ভবন ও সড়ক নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। গত পাঁচ বছরে আলীকদম উপজেলায় আলোচিত ও পর্যটন, যোগাযোগ, পাহাড়ের জীবনমান উন্নয়নে বড় চমক আলীকদম উপজেলার সবচেয়ে বড় প্রকল্প সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোর ১৬ ইসিবি তত্বাবধানে আলীকদম মায়ানমার সীমান্ত সড়ক, যার ব্যয় ৪৪৭ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।

আলীকদম উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিগত পাঁচ বছরে আলীকদম উপজেলায় ১১৬ কোটি ৪৭ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকার কাজ হয়েছে। এরমধ্যে ৮০% কাজ সমাপ্ত হয়েছে ২০% কাজ চলমান রয়েছে।

আরও পড়ুন