বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার জেলার সদর ইউনিয়নের জান্নাতুল হাবীবা করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বাড়ি । টানা ১১ দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়ে তিনি এখন সুস্থ।
আজ শুক্রবার (৮ মে) সকাল বেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক টিম তাকে করোনা ভাইরাস মুক্ত ঘোষণা দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার ছাড়পত্র দেন। নাইক্ষ্যংছড়ির সদর ইউনিয়নের কম্বোনিয়া গ্রামের দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত রোগী ছিলেন তিনি।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ এপ্রিল করোনা উপসর্গ দেখা দিলে তিনি নিজেই নাইক্ষ্যংছড়ি সদর হাসপাতালের আউটডোরে শরানাপন্ন হয়ে কর্মরত চিকিৎসককে জ্বর ও সর্দিকাশির কথা জানালে চিকিৎসক নমুনা সংগ্রহ করে। সেই নমুনা কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে পাঠানো হয়।
এরপর ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে তার করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই সদর ইউনিয়নের কম্বোনিয়া গ্রাম এলাকার ১৭ ঘর-বাড়ী লকডাউন করে দেয় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসন। পরদিন দুপুর থেকে আক্রান্ত জান্নতুল হাবিবাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা করানো শুরু হয় হয়।
এ ঘটনার পর জান্নাতুল হাবীবার পরিবারের ২০ সদস্যকেও হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে (আইইসিডিআর) পাঠানো হয়। সেখানে তাদের একি পরিবারের শিশুসহ তিন জনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে।
আজ ৮ মে শুক্রবার সাড়ে ১০টায় বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডা. আবু জাফর মো,ছলিম জানান, নাইক্ষ্যংছড়িতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দ্বিতীয় রোগী জান্নাতুল হাবীবার দুইবার নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার আইইসিডিআরে পাঠানো হলে তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তাই জান্নাতুল হাবীবাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করে বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এছাড়া একি পরিবারের শিশু সন্তানসহ তিন ব্যক্তির শারীরিক অবস্থাও ভালো। ওই তিন জনকে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে অ্যাম্বুলেন্সে জান্নাতুল হাবীবাকে নিজ বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
এলাকা সূত্রে জানা যায়, জান্নাতুল হাবিবা মহিলা তাবলীগের চিল্লাহয় যেতেন। সে একটি চাকরীও করতেন পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের অধিনস্থ পাড়া স্কুলে।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি জানান, করোনাকে পরাজিত করে সুস্থ হয়ে যাওয়া জান্নাতুল হাবীবা সংস্পর্শ আরও তিনজন পজেটিভ সনাক্ত রোগী আইসোলেশনে রয়ে যাওয়ায় এবং জান্নাতুল হাবীবাকে আরও সপ্তাহ খানিক হোম কোয়ারেন্টেইনে থাকার নির্দেশের ফলে ১৭ বাড়ির লকডাউন (তালা) রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৬ এপ্রিল উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার কোনাপাড়া ৫৯ বছর বয়সী বৃদ্ধ আবু ছিদ্দিক প্রথম করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। হাসপাতালের আইসোলেশনে ১০দিন চিকিৎসা নিয়ে তিনি এখন পুরোদমে সুস্থ আছেন।