বান্দরবান পৌর নির্বাচন : মেয়র পদে শিক্ষায় এইচএসসি’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ

NewsDetails_01

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বান্দরবান পৌরসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে পৌর মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তাদের কেউ কেউ এইচ.এস.সি পাশ হলেও অনেকে আবার স্বশিক্ষিত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ মনোনিত বর্তমান পৌর মেয়র মোহাম্মদ ইসলাম বেবী (নৌকা), জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনিত মোহাম্মদ জাবেদ রেজা (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি থেকে মো. শাহ জাহান (লাঙ্গল) সতন্ত্র পদে নারিকেল গাছ প্রতীকে মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও মোবাইল ফোন প্রতীকে বিধান লালা প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

আরো জানা গেছে, দলের নেতাকর্মীদের শক্ত অবস্থানের কারনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ ইসলাম বেবী ২০১৬ সালে বিএনপি’র প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে পৌর মেয়র নির্বাচিত হয়, গত ৫ বছর তিনি দায়িত্ব পালন করেন, এটি তার জন্য দ্বিতীয় র্নিবাচন। গত ৫ বছরের দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে বিরোধ, পৌরসভার টেন্ডার সুবিধা জামাত নেতা ও নিজের বলয়ের কর্মীদের দিয়ে আলোচনায় আসনে। কর্মীদের মামলা দিয়ে হয়রানি ও নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করেন। গতবারের নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীরা এই প্রার্থীর পক্ষে প্রানপন প্রচার-প্রচরণায় ব্যস্ত সময় কাটলেও এবার সেই উচ্ছাসের ঘাটতি আছে বলে মনে করছে অনেকে। যার ফলে নির্বাচনের মাঠে বেশ বেকায়দায় পড়েন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী, তবে শেষ হাসি হাসবেন এই প্রার্থী এমন মত অনেকের।

অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ জাবেদ রেজা ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ৫ বছর। পরে ২০১৬ সালে র্নিবাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ ইসলাম বেবীর কাছে পরাজিত হন, এটি তার জন্য তৃতীয় র্নিবাচন। দলের মধ্যে বিভাজন রেখার কারনে বিএনপির এই বেকায়দায় থাকলেও শেষ সময়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশে বিএনপির অন্য গ্রুপ দলের এই প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার জন্য মাঠে নামলেও শেষ সময়ের ভোটের ফলাফলে আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে টপকিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনা সহজ হবেনা বলে মনে করছে অনেকে।

অন্যদিকে এবার প্রথমবারের মত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে মো.শাহ জাহান এবং সতন্ত্র দুই প্রার্থী মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন এবং বিধান লালা।

NewsDetails_03

নিবার্চন কমিশনে দেয়া তথ্য মতে, প্রার্থীদের হলফ নামায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী, জাতীয় পার্টিসহ সতন্ত্র দুই প্রার্থীর নামে কোন মামলা না থাকলেও বিএনপি প্রার্থীর নামে রয়েছে ৩টি মামলা। সেখানে ১টিতে বেকসুর খালাস হলেও চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট,বান্দরবান এবং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত লামা চলমান রয়েছে ২টি মামলা।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ ইসলাম বেবী
মোহাম্মদ ইসলাম বেবী পেশায় ব্যবসায়ী, শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ.এস.সি। ব্যবসা থেকে তার বাৎসরিক আয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ৩ লাখ টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা, পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে স্থায়ী আমানত রয়েছে ১ লাখ টাকা। স্বর্ণ নিজের ০.৫ ভরি এবং স্ত্রীর ১২ ভরি। অকৃষিজ জমি রয়েছে ৪ একর।

বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ জাবেদ রেজা
মোহাম্মদ জাবেদ রেজা পেশায় ব্যবসায়ী (সরকার অনুমোদিত প্রথম শ্রেনীর সরবরাহকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান), শিক্ষাগত যোগ্যতা এস.এস.সি। ব্যবসা থেকে তার বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ৪ লাখ টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রয়েছে ২লাখ ২০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ১লাখ ৭০ হাজার। স্বর্ণ নিজের নামে, স্বর্ণে আংটি ১টি, স্বর্ণের চেইন ১টি,এবং স্ত্রীর স্বর্ণের বিবিধ অলঙ্কার ৪ তোলা এবং অন্যান্য দেখিয়েছেন নিজের নামে ৯১ লাখ ১৯ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ২০ লাখ ১৫ হাজার টাকা। অকৃষিজ জমি রয়েছে ২ একর পাহাড় ৪২শত ৩৫ ফুট জমি। দায় দেনার পরিমাণ দেখিয়েছেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড বান্দরবান শাখার একটি ৩০ লাখ টাকার ঋণ।

জাতীয় পার্টি প্রার্থী মোঃ শাহ জাহান
মোঃ শাহ জাহান পেশায় ব্যবসায়ী, শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বশিক্ষিত। ব্যবসা থেকে তার বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ১লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রয়েছে ৩ (তিন) হাজার টাকা।

সতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন
মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন পেশায় কৃষি জীবি/ব্যবসায়ী, শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচ.এস.সি। কৃষি খামার / ব্যবসা থেকে তার বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রয়েছে ২ লাখ ৫০হাজার টাকা। স্বর্ণ নিজের নামে বিবিধ স্বর্ণালঙ্কার ২ভরি ০.৫ ভরি এবং স্ত্রীর নামে ১০ ভরি, নির্ভরশীলদের নামে ৮ ভরি। দায় দেনার পরিমাণ দেখিয়েছেন ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড বান্দরবান শাখার থেকে কৃষি ঋণ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঋণ।

সতন্ত্র প্রার্থী বিধান লালা
বিধান লালা পেশায় ব্যবসায়ী, শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বশিক্ষিত। ব্যবসা/বাণিজ্যিক পশু খামার থেকে তার বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ৫১ হাজার টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রয়েছে ২০হাজার টাকা। স্বর্ণ নিজের নামে ৩ ভরি। ব্যবসায় বিনিয়োজিত ৬ লাখ টাকা। অকৃষিজ জমি রয়েছে ২ শতক।

আরও পড়ুন