বিলাইছড়ি নীলাদ্রি রিসোর্ট : যেখান মেঘ রৌদ্রের লুকোচুরি

NewsDetails_01

প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলা। পাহাড়, নদী, লেক এবং অনেকগুলো ছড়া প্রবাহিত হয়েছে এই উপজেলার কোল জুড়ে। এক কথায় প্রকৃতি যেন, আপন মাধুরিতে সাজিয়েছে এই উপজেলাকে।

পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে এখানে। বিশেষ করে পড়ন্ত বিকেলে কাপ্তাই লেকের মনোরম সৌন্দর্য দেখে যে কেউ হারিয়ে যেতে পারে কল্পনার রাজ্যে। এখানে বসে সূর্যোদয় এর অপরুপ দৃশ্য এবং বর্নিল আকাশে অস্তমিত সুর্য্যের নিদারুণ ক্যানভাস দেখার সুযোগ রয়েছে। এই উপজেলায় রয়েছে ছোট বড় অসংখ্য ঝর্না। তৎমধ্যে ধুপপানি ঝর্না যেন প্রকৃতি এক অপরুপ সৃষ্টি। এই ছাড়া মুপ্পোছড়া ঝর্না, ন- কাটা ছড়া ঝর্না, গাছকাটা ঝর্না দেখতে শত শত পর্যটক ভীড় করে এখানে। তবে রাত্রি যাপনের জন্য এখানে ভালো কোন ব্যবস্থা ছিলো না এতেদিন।

তাই বিলাইছড়ি উপজেলা সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরীর উদ্যোগে এবং এলাকার জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় ২০১৯ সালের ১২ আগস্ট মাসে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন হিলটপে গড়ে তোলা হয়েছে নীলাদ্রি রিসোর্ট ও শিশু পার্ক। এইছাড়া রিসোর্ট সংলগ্ন খলি জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে উপজেলা ক্যাফে। যেখান আগত পর্যটকদের জন্য ঘরোয়া পরিবেশে উন্নত মানের খাবারের সু-ব্যবস্থা রয়েছে।

নীলাদ্রি রিসোর্টে রয়েছে ৫ টি উন্নত মানের কটেজ। কটেজগুলোর নামকরণ করা হয়েছে উপজেলায় অবস্হিত ঝর্না এবং নদীর নামকরন অনুযায়ী। রিসোর্টে প্রবেশের মুখে ঝুলন্ত ব্রিজ এবং রিসোর্ট এর কেন্দ্রে পাহাড়ের ঘাঁ ঘেঁষে তৈরী করা হয়েছে মাচাং। যেখানে বসে দূর পাহাড়ের মেঘের ছটা, পূর্নিমার আলো এবং মেঘ রৌদ্রের লুকোচুরি দৃশ্য অবলোকন করতে পারছেন পর্যটকরা। এছাড়া রোদ বৃষ্টির ছোঁয়ায় বর্নালী রামধনু দেখতে পাওয়া যায় এখানে বসে।

NewsDetails_03

বিলাইছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা জানান, নীলাদ্রি রিসোর্টে ইতিমধ্যে সরকারের অনেক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা রাত্রিযাপন করেছেন। সকলেই এর সৌন্দর্য উপভোগ করে মুগ্ধ হয়েছেন।

বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান জানান, এই উপজেলাকে ব্র্যান্ডিং করা, এলাকার জনসাধারণের বিনোদনের ব্যবস্থা করা এবং সার্বিক ভাবে এলাকার আত্মসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখার অংশ হিসাবে নীলাদ্রি রিসোর্ট ও শিশু পার্ক নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।

গত শনিবার(৬ আগস্ট) সকালে নীলাদ্রি রিসোর্টে কথা হয় রাঙামাটির বরকল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল রানার সাথে। তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে এই রিসোর্টে রাত্রি যাপন করেছেন। তিনি জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে দূর পাহাড়ের মেঘের আনাগোনা দৃশ্য এবং সবুজ পাহাড় দেখে মনটা বেশ জুড়িয়ে গেলো। কথা হয় এই রিসোর্টে রাত্রি যাপন করা কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান এর সাথে। তিনি জানান, নীলাদ্রি রিসোর্ট দেখতে সত্যি অপরুপ। এইখানে বসে অনাবিল আনন্দ পাওয়া যায়।

এইখানে রাত্রি যাপন করা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের মাসুদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আরিফ, তৌহিদ, শান্ত জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে এই রিসোর্ট হতে দূর পাহাড়ের দিকে তাকালে মনটা প্রশান্তিতে ভরে উঠে।

বিলাইছড়ি উপজেলার শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এই এলাকার অধিবাসী বিপ্লব বড়ুয়া বাপ্পি জানান, বিলাইছড়ি উপজেলার প্রানকেন্দ্রে এই রিসোর্ট এবং শিশু পার্ক নির্মানের ফলে প্রতিদিন বিকেল বেলা এলাকার শিশুরা মুক্ত বাতাসে বেড়াতে চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পারছেন। তাছাড়া ভ্রমন পীপাসু পর্যটকরা এইখানে রাত্রি যাপন করতে পারছেন।

আরও পড়ুন