পাহাড়, প্রকৃতি দেখতে বান্দরবানে পর্যটকদের ভীর

পাহাড়, অরণ্য, ঝিরি, ঝরনা আর মেঘের লুকোচুরির অপরুপ রুপে সজ্জিত পার্বত্য জেলা বান্দরবান। সারা বছর পর্যটক সমাগম থাকলেও সরকারি ছুটির দিনগুলোতে ভিড় বাড়ে বান্দরবানে কয়েকগুণ। বড়দিনের বন্ধের সঙ্গে বৃহস্পতিবার একদিন ছুটি নিয়ে অনেকের মিলেছে টানা ৪দিনের ছুটি আর এতে ভিড় বেড়েছে বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি, শৈল প্রপাত, প্রান্তিক লেক, চিম্বুকসহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখন পর্যটকে মুখর হচ্ছে জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলো। যাতায়াত সুবিধার কারণে বান্দরবানের বিভিন্ন দর্শনীয়স্থানে সহজেই ছুটে যাচ্ছে পর্যটকেরা। শীতের এই আমেজে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করছে দেশের নানান প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা।

বান্দরবানের অন্যতম সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র নীলাচলে বেড়াতে আসা পর্যটক মো.সাইম জানান, বড়দিনের ছুটি নিয়ে বান্দরবানে বেড়াতে এসেছেন। বুধবার বড়দিন ছিল আর বৃহস্পতিবার একদিন ছুটির পাশাপাশি শুক্র, শনিবার সরকারি ছুটি নিয়ে মোট চারদিনের টানা বন্ধে বান্দরবান ভ্রমন করে প্রচুর মজা পাওয়া যাচ্ছে। পাহাড়, নদী, ঝর্ণা আর মেঘ দেখে পরিবারের সবাই পুলকিত বলে জানান তিনি। শীতের দিনে বান্দরবানের পাহাড়ে ঘুরতে অনেক আনন্দ আর কুয়াশার মধ্য দিয়ে পাহাড়ী সড়কে ভ্রমনের স্বাদ অতুলনীয় বলে জানান তিনি।

রাজশাহী থেকে বান্দরবানের মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমনে আসা পর্যটক জুলি জানান, বান্দরবান আমাদের পছন্দের তালিকায় ১নং একটি এলাকা। যেকোন ছুটি পেলে আমি বান্দরবান চলে আসি। বান্দরবানে প্রায় এই পর্যন্ত ১০বার ভ্রমন করেছি আর প্রতিবারই নতুন নতুন পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আমি ভ্রমন করি।

পর্যটক জুলি আরো জানান, জেলা সদরের পাশাপাশি দুর্গম উপজেলা রুমা ও থানচির অপরুপ দৃশ্য সকলের নজর কাড়ে। পর্যটন জেলা বান্দরবান ভ্রমনে যে কারোর নতুন উদ্দিপনা সৃষ্টি হয় বলে জানান তিনি।

NewsDetails_03

এদিকে দীর্ঘদিন পরে জেলার পর্যটনকেন্দ্র গুলোতে ভিড় বাড়ায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। পর্যটক সমাগম বাড়লে রাজস্ব আদায় বাড়ার পাশাপাশি অতীতের ক্ষতি পুষিয়ে উঠবেন বলে মনে করছেন তারা।

বান্দরবান হোটেল রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন জানান, সাপ্তাহিক ছুটি ও বড়দিন উপলক্ষ্যে বান্দরবানের হোটেল মোটেল ও রিসোর্টে বুকিং বেড়েছে। টানা ছুটির কারণে বান্দরবানে পর্যটক বেড়েছে আর পর্যটন সংশ্লিষ্টরা অতীতের কিছু ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে পারবে।

বান্দরবান জিপ-মাইক্রো-কার মালিক সমবায় সমিতির লাইন পরিচালক মো.কামাল জানান, বান্দরবান জিপ-মাইক্রো-কার মালিক সমবায় সমিতির আওতায় প্রায় ৪৫০টি চান্দের গাড়ি, জিপ ও মাইক্রোবাস রয়েছে। বেড়াতে আসা পর্যটকরা এই গাড়িগুলোতে জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমন করে।

সমিতির লাইন পরিচালক মো.কামাল আরো জানান, যেকোন বন্ধে বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক এর আগমন ঘটে আর জিপ-মাইক্রো-কার মালিক সমবায় সমিতির আওতাধীন এই চাঁদের গাড়ীতে ঘুরে পর্যটকরা প্রচুর আনন্দ উপভোগ করে।

এদিকে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, বান্দরবানের ৭টি উপজেলাতে প্রচুর পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে আর জেলা সদরের পাশাপাশি লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাসহ প্রতিটি উপজেলায় পর্যটকেরা ভ্রমন করছে নিয়মিত।

জেলা প্রশাসক আরো জানান, বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রশাসন কাজ করছে এবং পর্যটনকেন্দ্রগুলোর উন্নয়নে প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে।

আরও পড়ুন