আতংকে বান্দরবানের মানুষ : ৬ নিহতের একজনের লাশ হস্তান্তর

NewsDetails_01

বান্দরবানের সদর উপজেলার বাগমারা এলাকায় শসস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৬ জন নিহতের মধ্যে একজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এই ঘটনায় জেলা জুঁড়ে চরম আতংক বিরাজ করছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ৬ নিহতের ময়নাতদন্ত শেষ হলে গুলিতে নিহত জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপের বান্দরবান জেলা সমন্বয়ক রতন তংচঙ্গ্যার (৫০) লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। অন্যদিকে সংগঠনটির খাগড়াছড়ি উপদেষ্টা কমিটির সদস্য চিং থোয়াইঅং মারমা ডেভিড (৫৬)। পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির খাগড়াছড়ির সদস্য রবীন্দ্র চাকমা (মিলন) ৫০। পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির খাগড়াছড়ির সদস্য রিপন ত্রিপুরা জয় (৩৫) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির খাগড়াছড়ির সদস্য জ্ঞান ত্রিপুরা (দিপেন) (৩২) এর লাশ পরিবারের কাউকে এখনও হস্তান্তর করা হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,গত মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে জেলার সদর উপজেলার বাগমারা এলাকায় শসস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিতে রতন তংচঙ্গ্যার বাসায় রতনসহ জেএসএস এমএ লারমা গ্রুপের ৬ সদস্য নিহত হয়। এসময় নিরু চাকমা, বিদ্যুৎ ত্রিপুরা, মিজ পুরু বা চিং আহত হলে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। নিহত এবং আহত দুজন গত ৩১ মে থেকেই সেই বাসায় অবস্থান করছিলেন।

জেলার ৬নং নোয়াপতং ইউনিয়নের মেম্বার মিচি মার্মা বলেন, ঘটনার পর থেকে স্থানীয়দের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে, চারদিকে যেন শুনশান নিরবতা।

NewsDetails_03

আরো জানা গেছে, বান্দরবান জেলায় পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর এই প্রথম একসাথে ৬ জন নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার ও তিনজন গুলিবিদ্ধের ঘটনা ঘটে। আর এই ঘটনায় জেলা জুঁড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকাটিতে যৌথবাহিনী অভিযান চালালেও এখনও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি, থানায় দায়ের করা হয়নি মামলা।

আরো জানা গেছে, চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি জেলা সদরের জামছড়ি এলাকায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচনু মার্মাকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং পাড়ার পাঁচ জন গুরুতর আহত হন। ১৭ এপ্রিল রোয়াংছড়ি উপজেলার কেনাইজু পাড়ায় মগ পার্টি মং সাইন মার্মাকে এবং ১৫ জুন বান্দরবানের কুহালং ইউনিয়নের একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গত ২জুন লুল থাং বম নামে এক আওয়ামীলীগ কর্মীকে এবং ৫ জুলাই কুহালং ইউনিয়নের নিজ বাসায় ফেরার পথে গুংলা ত্রিপুরাকে অপহরণ করা হলেও তাদের সন্ধান মেলেনি। ফলে একের পর এক হত্যাকান্ড ও অপহরণের ঘটনায় জেলা জুঁড়ে চরম আতংক বিরাজ করছে, ব্যবসায়ি ও উন্নয়ন কাজের ঠিকাদাররা ব্যবসার জন্য এখন এসব এলাকায় প্রবেশ করছে চরম ভয়ের মধ্যে।

এই ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী বলেন, ধারাবাহিক হত্যাকান্ডের ফলে সম্প্রিতীর এই জেলায় আতংক বিরাজ করছে, শসস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান গ্রহন করা উচিত।

স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন পার্বত্য জনসংহতি সমিতি (সন্তু লারমা গ্রুপ), জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা গ্রুপ) ও মগ লিবারেশন পার্টির (এমএলপি) ও ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর চর্তুমুখী বিরোধের জেরে জেলায় এই হত্যাকাণ্ড ও অপহরণের ঘটনা ঘটছে। আর এর শেষ কোথায় সেই প্রশ্ন এখন স্থানীয়দের মুখে মুখে।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, ৬ হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে, অপরাধীদের ধরতে কাজ করছে যৌথবাহিনী।

আরও পড়ুন