বান্দরবান সীমান্তে আতংক : নিরাপত্তার কারণে ৫ স্কুল বন্ধ

NewsDetails_01

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরকান আর্মি ও আরএসও এর সাথে সেই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘাতের ঘটনায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের বসবাসরতদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। ফলে ঘুমধুমে নিরাপত্তার কারণে ৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মঙ্গলবার একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রি রতন চাকমার আবেদনের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের কাছের পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

বন্ধ ঘোষণা করা স্কুলগুলো হলো, বাইশফারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রেজু গর্জন বুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যালয়গুলোর বন্ধের পরিধি আরো বাড়তে পারে।

জানা যায়, মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যান্তরে আরকান আর্মি (এএ) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) বিদ্রোহী গোষ্ঠী সাথে মিয়ানমার সরকারী বাহিনীর গুলি বিনিময়ের ঘটনায় এপাড়ে গোলা ও গুলি পড়ার কারনে সীমান্তের আশেপাশে বসবাসরত লোকজন ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।

আরও জানান, মিয়ানমার-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ঘেষে মিয়ানমার অংশে গত ৩ দিনে অর্ধশতাধিক মর্টার শেলের প্রকট শব্দে ৪৭ ও ৪৮ নম্বর সীমান্ত পিলারের বাংলাদেশের অভ্যন্তর এসব গোলার আওয়াজে কেঁপে উঠেছে। আর একারনে আতঙ্কিত হচ্ছে সীমান্তবাসি।

NewsDetails_03

এই বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ২৯ জানুয়ারি (সোমবার) সকালে ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এতে কেউ হতাহত না হলেও আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্তে বসবাসকারীরা।

ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্রো বলেন, আমরা যারা এপারে বসবাস করছি সবাই আতঙ্কে আছি, বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে না যাওয়ার জন্য স্থানীয়দের সতর্ক করা হচ্ছে।

আরো জানা গেছে, গত ৮-১০ দিন থেকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গোলাগুলি হচ্ছে, এসময় ব্যবহার করা হচ্ছে যুদ্ধ হেলিকপ্টার। মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসা সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাত বর্তমানে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। কদিন ধরেই সীমান্ত এলাকায় ভারী অস্ত্র থেকে ছোড়া গুলি এবং মোটরশেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে, দেখা যাচ্ছে আগুনের ধোঁয়া। এর আগেও মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া গোলা বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পড়ে।

মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্কতা থাকার নির্দেশ দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান।

তিনি গত রবিবার (২৮ জানুয়ারি) বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়ান (৩৪ বিজিবি) এর অধীন উখিয়ার পালংখালী বিওপি এবং নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বিওপি ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা এবং টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীন হোয়াইক্যং বিওপি ও তৎসংলগ্ন সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করে এ নির্দেশনা দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ জানুয়ারি সকাল থেকে জেলার তুমব্রু সীমান্তের ওপারে ২ বিদ্রোহী গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, বান্দরবান সীমান্তের মিয়ানমারের এলাকাগুলো মূলত মিয়ানমারের বিদ্রোহী শসস্ত্র গোষ্ঠির দখলে।

আরও পড়ুন