স্বামী হারিয়ে বিপাকে দুই ফায়ার ফাইটারের পরিবার

২ জনের বাড়ি রাঙামাটিতে

NewsDetails_01

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিস্ফোরনে মারা যাওয়া রাঙামাটির দুই ফায়ার সার্ভিস সদস্যের পরিবারে শোকের মাতম চলছে। স্বামী হারিয়ে শোকে পাথর মিটু দেওয়ানে স্ত্রী, অন্যদিকে স্বামী যে বেচে নেই বিশ্বাস করতে পারছেন না নিপুন চাকমার স্ত্রী। আর তাদের তিন মেয়ের কাছে বাবা নেই, এটা কল্পনাও করতে পারছে না। সব মিলিয়ে রাঙামাটিতে অবস্থিত এই দুই পরিবারে চলছে কান্নার আহজারি।

গত শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ৯ ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের মধ্যে ২ জনের বাড়ি রাঙামাটি শহরে। নিহতরা হলেন, পশ্চিম ট্রাইবেল আদামের মিঠু দেওয়ান এবং কলেজ গেট মন্ত্রী পাড়ার নিপন চাকমা। নিহত দুজনই ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার ছিলেন। এদের কর্মস্থল ছিল মিতুর সীতাকুন্ডে এবং নিপনের কুমিরায়।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, নিহতরা শনিবার রাতে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান আগুন নেভাতে। এ সময় বিস্ফোরণ হলে এরা ঘটনাস্থলে নিহত হন।

জানা গেছে, টিটু দেওয়ান ছুটি শেষে ৪ জুন চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। পরিবারে তার স্ত্রী ও একমাত্র কণ্যা সন্তান রয়েছে। মেয়ে বান্দরবানে পড়াশোনা করেন। তার আকস্মিক মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গেছে তার স্ত্রী মহিনী দেওয়ান। কারো সাথে কথাই বলছেন না তিনি।

NewsDetails_03

অন্যদিকে, স্বামীর মৃত্যুতে দুই মেয়ে নিয়ে ভবিষ্যত অন্ধকার দেখছেন নিপুন চাকমার স্ত্রী। শনিবার রাত ৯টায় শেষবার স্বামীর সাথে কথা হয়েছে তার। এরপর সকালে ঘটনার শুনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও মোবাইলে সংযোগ পাননি। রবিবার বিকেলে রাঙামাটি ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তার মাধ্যমে তিনি নিশ্চিত হন, তার স্বামী মারা গেছেন। স্বামীর মৃত্যুতে নিপুন চাকমার স্ত্রী দুই মেয়ে নিয়ে কি করবেন এখন বুঝে উঠতে পারছেন না। এ বিষয়ে তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

এই দুই পরিবারের আত্বীয়-স্বজনরা জানান, একটিমাত্র ঘটনায় পরিবারের একমাত্র উপার্জন করা ব্যক্তির মৃত্যুতে দুটি পরিবারই পথে বসে গেল। সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে এই দুই পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।

এদিকে, আজ সোমবার সকালে দুই ফায়ার সার্ভিস সদস্যের মৃতদেহ আনা হয় রাঙামাটিতে। রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন প্রাঙ্গণে এই দুই বীরকে শেষ শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনসহ ফায়ার সার্ভিসের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

নিজেদের ধর্মীয় রীতি অনুসারে নিপুনকে আসামবস্তি শ্বশানে এবং মিঠুকে রাঙাপানি শ্বশানে দাহ করা হবে জানিয়েছেন পরিবারের লোকেরা। শেষকৃত্যের জন্য জেলা ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন