আলীকদমে ইউএনও প্রত্যাহারের নেতৃত্ব দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান কালাম

গরু পাচার রুখতে গিয়ে ইউএনওর সাথে বিরোধ !

NewsDetails_01

বান্দরবানের আলীকদমে ইউএনও প্রত্যাহারের দাবিতে উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারী ও মিয়ানমারের গরু পাচারকারী সিন্ডিকেট। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরোধ চলছে আসছে। এবার আরও প্রকাশ্যে নিয়ে এলো নাগরিক কমিটির বান্দরবান জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম।

আজ শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে চৌমুহনী থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি পুলিশের বাধার মুখে ক্যান্টিন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল কালাম।

বিক্ষোভ মিছিলে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান ইউএনও আলীকদম আসার পর থেকে নিয়ম বহির্ভূত কাজ করে আসছিল। মেরাংথং জাদি পাহাড়ে রেষ্ট হাউস নির্মাণ করতে চেয়েছে, বাঁধার মুখে করতে পারেনি। পর্যটনের নামে ম্রো বাহিনীর কমান্ডারের বাগানের ছোট ছোট গাছ কেটে বিতর্কিত কর্মকান্ড করছেন ইউএনও।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ছোট ভাইয়ের নিজেদের টাকায় খেলা চালিয়েছে। সে খেলায় আমাকেও প্রধান অতিথি করার কথা ছিল কিন্তু প্রধান অতিথি হিসেবে গেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি অযোগ্য ও মানসিক ভারসাম্য হীন একজন ইউএনও। অতি দ্রুত এই ইউএনও কে আলীকদম থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। ইউএনওকে প্রত্যাহার না করলে কঠোর কর্মসূচী নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল কালাম।

এদিকে যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকের এই বিক্ষোভ মিছিল সেই ফুটবল টুর্ণামেন্টের আয়োজনকারী আবাসিক যুব স্বাধীন সমাজ ও খেলোয়াড়রা কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

NewsDetails_03

খেলা পরিচালনাকারী কমিটি সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ও দুইদলের অধিনায়ক মোহাম্মদ করিম, মোঃসোহেল বলেন, গত কালকের ঘটনার সাথে আজকের মিছিলের কোন সম্পর্ক নেই, আমরা কাউকে বিচারও দেয়নি। খেলার বিষয়ে আমাদের কোন মন্তব্যও নেই।

তারা আরও বলেন, যে ভিডিও নিয়ে এত ঘটনা ঘটছে। আর আগে ও পরে আরও অনেক কিছু ছিল কিন্তু কেটে ফেলা হয়েছে। ট্রফি ছুড়ে ফেলার জন্য ইউএনওকে খেলোয়াড়রা বলেছেন। ইউএনও খেলোয়াড়দের মধ্যে কোন ঝামেলা না হোক সেটায় চেয়েছেন। আমাদের কাছে ১৫ মিনিটের ভিডিও আছে। ভিডিও দেখলে ইউএনওর অপরাধ কি ছিল স্পষ্ট হয়ে যাবে। এঘটনাকে একটি মহল রং মাখছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহরুবা ইসলাম বলেন, পুরো ভিডিও দেখলে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে। আমি ইচ্ছে করে তো ট্রফি ছুড়ে ফেলিনি। খেলোয়াড়রাই তো বলেছে ট্রফিটি যাতে আমি ভেঙে ফেলি। ট্রফি ছুড়ে ফেলার পর খেলোয়াড়দের মন খারাপ হওয়ার কথা কিন্তু উল্টো খুশিতে হাততালি দিচ্ছে এটি কখনও দেখছেন। ট্রফি ছুড়ে ফেলার পর সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। তারা সম্মানিত পদক গ্রহণ করছে।

তিনি আরও বলেন, আমার জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে সরাতে পারলে উনার কার্য হাসিল হয়। আমি সরকারের একজন প্রতিনিধি হিসেবে কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছি না এটি একটি মাথা ব্যাথা। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ গরু পাচারের সময় বার বার গরু আটক হচ্ছে। এটি নিয়ে অনেক অবৈধ গরু ব্যবসায়ী আমার উপর ক্ষিপ্ত। তাছাড়া গরুকে কেন্দ্র করে বিশাল একটি সিন্ডিকেট চাঁদাবাজি করছে। আমার জন্য সেই চাঁদা বন্ধ হয়ে গেছে। মুলত এগুলোর ক্ষোভ প্রকাশের জন্য ছোট স্বাভাবিক বিষয়টাকে অস্বাভাবিক করছে।

গতকাল চৈক্ষ্যং এলাকার একটি টুনামেন্টে ইউএনও ট্রফি ছুড়ে ফেলার ভিডিওটি প্রকাশ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল কালাম। এরপর ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যোগাযোগ মাধ্যমে, শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।

আরও পড়ুন