দীঘিনালায় ব্যাঙের ছাতার মত যত্রতত্র গড়ে উঠছে করাতকল

NewsDetails_01

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সরকারি নিয়ম-নীতি না মেনে যত্রতত্র গড়ে উঠছে অবৈধ করাতকল। স্থানীয়দের অভিযোগ, করাতকল স্থাপনে বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র সহ নির্দিষ্ট কিছু বিধিমালা মানার নির্দেশনা থাকলেও দীঘিনালায় এসবের তোয়াক্কা নেই বেশ কয়েকটি করাতকলে। তবে নিয়ম মেনেই করাতকল গুলোর লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। অধিকাংশ করাতকল পরিচালকরা বলছে বন বিভাগের লাইসেন্স আছে তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছর প্রশাসন ও বনবিভাগের কর্মকর্তারা অবৈধ করাতকলগুলোতে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিলেও সপ্তাহ খানেক পরে ফের চালু হয় এসব করাতকলগুলো। করাতকল বিধিমালা-২০১২ তে বলা আছে, কোনো সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে এমন স্থান থেকে কমপক্ষে ২০০ মিটার এবং সরকারি বনভূমির সীমানা থেকে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন করা যাবে না। এই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না অধিকাংশ করাতকলে।
সরেজমিনে দীঘিনালার মেরুং, বোয়ালখালী, কবাখালী ও বাবুছড়া এলাকায় ঘুরে ১২টি করাতকলের দেখা মিলে। এরমধ্যে মেরুং একটি, হেড কোয়ার্টারে একটি, বেতছড়িতে একটি, জামতলীতে একটি, ছাত্রাবাস এলাকায় দুইটি, দীঘিনালা থানা বাজারে দুইটি, কবাখালীতে একটি, বরাদমে দুইটি ও বাবুছড়া নোয়াপাড়ায় একটি করাতকল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া অধিকাংশেরই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বেশিরভাগ সময় রাতে ট্রাকযোগে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কাঠ আসে। অবৈধ হওয়ায় এসব করাতকলে হিসাব হয় না যে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কী পরিমাণ কাঠ আসে। মাঝেমধ্যে উপজেলা প্রশাসন এসব কাঠ করাতকলে আসার সময় আটক করে। তবে বেশিরভাগ সময় কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই বনাঞ্চল থেকে কাঠ এসে অবৈধ করাত কলে চেরাই হচ্ছে।
জানতে চাইলে ছাত্রাবাস এলাকার পাশে গড়ে উঠা করাতকলের ম্যানেজার মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা বন বিভাগের লাইসেন্স দিয়ে করাতকল পরিচালনা করছি। আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।

NewsDetails_03

এরই পার্শ্ববর্তী হিরেন করাতকলের ম্যানেজার নাজির হোসেন বলেন, আমাদের করাতকলের অনুমোদন আছে কিনা আমার জানা নেই ও আমার জানার বিষয় না। এসব বিষয় করাতকলের মালিক জানে।

এ বিষয়ে দীঘিনালা থানাবাজার ইয়াকুব করাতকলের মালিক মো. ইয়াকুব আলী বলেন, আমার করাতকলের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও বন বিভাগের সনদ দুটোই আছে। তবে চৌমুহনী স্টিল ব্রীজের পরের করাতকল গুলোর কোন অনুমোদন নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সরকারি নিয়ম নীতি মেনে ফাইল চেক করে করাত কল গুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে সবগুলো করাতকল আমাদের আওতায় নয়। রাঙামাটি রেঞ্জের আওতায়ও কিছু করাতকল রয়েছে। তাই সঠিক পরিসংখ্যানে অনুমোদিত করাতকলের সংখ্যা জানাতে পারছিনা।

আরও পড়ুন